খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর সকল তথ্য! Priyotottho

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর সকল তথ্য!

৬২ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত, পঞ্চম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের একটি উচ্চশিক্ষার পীঠস্থান: খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা ইতিহাস

চমকপ্রদ এক ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে খুকৃবির (খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা হয়েছে, সে কথাটি বললে অত্যুক্তি হবে না। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার ভূমিগুলো লবণাক্ত হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকার মানুষের কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছিল! তাদের দাবি ছিল অন্তত এই সমস্যাটি রোধ করার জন্য কোন একটি উদ্যোগ নেয়া হোক। তাইতো, এই এলাকার কৃষিভূমি গুলো লবণাক্ততা থেকে মুক্তির জন্য গবেষণা কার্যক্রম পরিচালন ও এই এলাকার কৃষি প্রযুক্তি কে উন্নত করার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা!

মূলত এক জনসভায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে এই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অর্থাৎ খুকৃবি’র গোড়াপত্তন হয়। প্রতিশ্রুতির ৫ মাস পর ইউজিসি(বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) কর্তৃক গঠিত ১২ সদস্যের কমিটির প্রস্তাবিত কাঠামো এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের ভিত্তিতে পরবর্তীতে সংসদে পক্ষীয় বিল পাস হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো

সংক্ষেপে ‘খুকৃবি’ নামে পরিচিত এই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো অত্যন্ত অর্থবোধক। লোগোর একদম ওপরের অংশে লিখা ‘জ্ঞান – দক্ষতা – প্রযুক্তি’ যা দ্বারা বোঝায় জ্ঞান অর্জন করো, দক্ষতা তৈরী করো এবং প্রযুক্তিতে অবদান রাখো। নিচের অংশে ধনুকের মতো বাঁকা করে বড়ো অক্ষরে লিখা “খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়”।

See also  University of South Carolina : Discover Campus Life.

অনুষদ ও বিভাগসমূহ

বিশ্ববিদ্যালয়টি তে বর্তমানে ৭ টি অনুষদ ও ৫১ টি বিভাগ রয়েছে। অনুষদ গুলো হচ্ছেঃ পশুচিকিৎসা পশু ও জৈব চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদ, কৃষি অনুষদ, মৎস্য ও মহাসাগর বিজ্ঞান অনুষদ, কৃষি অর্থনীতি এবং কৃষিবিজ্ঞান গবেষণা অনুষদ, কৃষি প্রকৌশল ও গবেষণা অনুষদ, খাদ্যবিজ্ঞান ও নিরাপত্তা অনুষদ, পরিবেশ এবং দুর্যোগ ঝুঁকি এবং কৃষি আবহাওয়া গবেষণা অনুষদ। প্রত্যেকটি অনুষদের অধীনে যথাক্রমে ১৫ টি, ১১টি, ৬টি, ৬টি, ৫টি, ৪টি এবং ৪টি বিভাগ রয়েছে। তাছাড়া স্বনামধন্য এই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রী রয়েছে ১২ টি বিষয়ের।

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও পদসংখ্যা

শত শিক্ষার্থী নিয়ে মুখরিত এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট অনুমোদিত পদসংখ্যা ৪৩৩ টি। যেখানে বর্তমানে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যথাক্রমে ৭৫ জন, ২৩ জন ও ৭৪ জন মিলে সর্বমোট ১৭২ জন নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। যদিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৬১ পদ এখনো খালি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কমিটি

খুকৃবি’র আইনে ভিসি’র নেতৃত্বে ২৪ সদস্যের সিন্ডিকেট গঠনের বিধান রয়েছে। তার মধ্যে দুইজন হবেন সংসদ সদস্য। খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১৫ সনের ১২ নং আইনের ১৯ নং অনুচ্ছেদের ১ নং ধারার ‘খ’ অংশে দুইজন সংসদ সদস্যে সিন্ডিকেট কমিটিতে অংশ নেয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে, যাদের মনোনীত করবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার। এই মনোনয়ন এর একটি উদাহরণ হচ্ছে, ‘২০১৯ সালে খুকৃবি ভিসি কর্তৃক স্পিকার শিরিন শারমিন বরাবর চিঠি আবেদনপত্র পাঠিয়ে হয় দুইজন সংসদ সদস্য কে মনোনীত করণ’

See also  How to Remove Repeating Rows in Excel : Time-Saving Tricks

মাস্টারপ্ল্যান অব খুকৃবি

সদ্য প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টি কে শক্ত অবস্থানে নেয়ার জন্য বিভিন্ন ব্যয়বহুল পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চমকপ্রদ মাস্টারপ্ল্যান গুলো রীতিমতো অবাক করার মত। নিম্নোক্ত মাস্টারপ্ল্যান গুলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নেয়া হচ্ছে।

-সম্ভাব্যতা যাচাই

অবকাঠামোগত উন্নয়ন, গবেষণা সংক্রান্ত কাজ, একাডেমিক এবং বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণে ৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয় করার সম্ভাব্য একটি খরচ নির্ধারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

-ভূমি অধিগ্রহণ

শুরু হতে ভাড়া করা ভবন আর অতিথি শিক্ষক দিয়ে উপাচার্যের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল খুকৃবি। কিন্তু ডুমুরিয়া উপজেলায় বিলতবলা এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস তৈরীর জন্য ১ হাজর ৫০০ একর ভূমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গ্রামীন অর্থনীতিতে বিপ্লব আনতে ৪টি কৃষি ব্যবসার আইডিয়া!

আন্তর্জাতিক মানের করে তোলা

ইউসিজি’র নিকট অনুমোদনের অপেক্ষায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ হাজার ১৬৮ জনবল সংবলিত অর্গানোগ্রাম। অনুমোদন পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩ টি বিভাগে কৃষি শিক্ষা, একাডেমিক কার্যক্রম সুচারুরূপে সম্পাদন করবে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। এই বিশ্ববিদ্যালয় কে আন্তর্জাতিক মানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য সব ধরণের প্রচেষ্টায় রত বিশ্ববিদ্যালয়ের কতৃপক্ষ।

See also  Electronic Passport Bangladesh

কৃষি ঝুঁকি মোকাবেলায় গবেষণা কার্যক্রম

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের অনেকদিন ধরে অনুরোধ করার প্রেক্ষিত প্রতিষ্ঠিত হয় উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। দক্ষিণাঞ্চলের জমিগুলো লবণাক্ত হওয়ার কারণে ইতিমধ্যে প্রচুর কৃষিভূমি ঝুঁকির মধ্যে। এই ঝুঁকি মোকাবেলায় বিশ্ববিদ্যালয় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে গবেষণা কার্যক্রম চালাচ্ছে। প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে যদিও এই প্রস্তাবও এখনো  ইউজিসি’র অনুমোদনের অপেক্ষায়।

সেশনজটমুক্ত শিক্ষাজীবন

সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সেশনজটের অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে। করোনাকালীন সময়ে সেই ব্যপ্তি যেন আরো বেড়েছে। “খুকৃবি” সেই সময়েও অনলাইনে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছিল অনলাইন ভিডিও ক্লাসের মাধ্যমে। যদিও বাংলাদেশের বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এই ধরণের অনলাইন কার্যক্রম চালাতে ব্যর্থ হয়েছিল। প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর জন্য বিভিন্ন মাস্টারপ্ল্যান হাতে নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় টি। তাইতো, ভবিষ্যতে মহামারী সংকট কিংবা অন্যান্য যেকোন সংকটে শিক্ষার্থীদের সেশনজট নিয়ে চিন্তায় থাকতে হবে না। যেকোন রাজনৈতিক সংকট কিংবা অন্যান্য যেকোন পরিস্থিতি তে ও শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে 

শিক্ষাজীবন পার করতে পারবে। “স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে আগামী ৫০ বছর পরের খুকৃবি কেমন হবে তার চিত্র সামনে রেখে মাস্টারপ্ল্যান করছে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়”। অ্যাসাইনমেন্ট লেখার সঠিক নিয়মাবলী জেনে নিন!

Leave a Comment